বিজ্ঞাপনে, সিনেমায় হরেক রকমের প্রচার। এলাকায় গিয়ে সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রচার। তারপরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। এখনও দেশের পঞ্চাশ শতাংশ মহিলা ঋতুস্রাবের সময় স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করেন না। পরিণাম? অপরিচ্ছন্নতার কারণে অসুস্থতা, এমনকি মৃত্যু। অথচ এত বড় অসুস্থতাকে গোটা সমাজ ব্যবস্থা চিরকাল জটিল আর দুর্বোধ্য, এমনকি লজ্জার তকমা দিয়ে আড়াল করেই রেখে দিয়েছে।
দেশের মহিলাদের মধ্যে সচেতনতার মাত্রা এখনও এতটাই কম যে কাজের সুবিধার জন্য ঋতুস্রাবের সময় কাপড় ব্যবহার করতে পারেন তাঁরা, কিন্তু সুস্থতার জন্য স্যানিটারি প্যাড নয়। বিদেশি বা ব্র্যান্ডের কোম্পানির পাশাপাশি দেশের বহু মহিলা পরিচালিত সেল্ফ হেল্প গ্রুপ স্যানিটারি প্যাড অত্যন্ত কম দামে দিয়ে থাকে। কিন্তু শুধুমাত্র সচেতনতার অভাবের জন্য তা ব্যবহার করেন না মহিলারা। এবার একটি বহুজাতিক সংস্থা মহিলা থেকে কিশোরীদের জড়তা কাটাতে নিলেন এক অভিনব উদ্যোগ।
দেশের প্রায় ৪৮.৪ শতাংশ মহিলা স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করেন না। তার মধ্যে এমন বয়সে কিশোরী রয়েছে, যাঁদের স্কুলছুট হওয়ার পিছনেও একটা বড় কারণ হয় ঋতুস্রাব। একটা সময় যে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার বয়স ১৮-১৯ ছিল, এখন তা কমে ৮-৯ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সুস্থ স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনে যাতে সেই শিশুরা ভয় না পায়, বিজ্ঞাপনে প্রচারে মজার ছলে গানের ব্যবহার করা হয়েছে। খুব সহজে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে ঋতুস্রাব কতটা স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া। যেমন শরীরের অন্য কোনও প্রয়োজনে বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তেমনই ঋতুস্রাব কোনও জটিল দুর্বোধ্য সমস্যা নয়। এক্ষেত্রেও স্যানিটারি প্যাডের ব্যবহার করা প্রয়োজন সুস্থতার জন্য।
বিজ্ঞাপনে দুটি মিউজিক ভিডিও-তে অংশ নিয়েছেন গায়িকা শ্রেয়া ঘোষাল ও গায়িকা সুনিধি চৌহান। দশ বছর বা তারও কম বয়সি এবং তার থেকে বেশি বয়সের শিশুদের ব্যবহার করা হয়েছে এখানে। এমনকি ছেলেদের অংশগ্রহণও রয়েছে চোখে পড়ার মতো। দুই গায়িকা ঋতুস্রাবের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা একেবারে শিশুদের বোঝার মত সহজ ভাষায় গানের গেয়ে শিশুদের বুঝিয়েছেন। এবং যে আনন্দের প্রতিচ্ছবি এই বিজ্ঞাপনে তুলে ধরা হয়েছে, তাতে ৮-৯ বছরে ঋতুস্রাব হলেও তাতে আতঙ্কিত না হওয়ার মতো মনের জোর পাবে শিশুরা, একথা বলাই বাহুল্য।
Shreya And Sunidhi
সিদ্ধার্থ দাস! স্নাতক কোর্সের পর নিয়মিত লেখালেখি শুরু করেন।
17 বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখক হিসাবে কাজ করছেন।
বর্তমানে রাজারহাট বার্তার সাব-এডিটর ও ক্রিয়েটিভ হেড হিসেবে কর্মরত।