ম্যানগ্রোভে ঘেরা সুন্দরবনে মানুষের জীবন মৃত্যুর লড়াই চলে দক্ষিণ রায়ের সঙ্গে। একদিকে মানুষ জঙ্গলে জায়গা কাঠ আনতে ওপর দিকে রয়াল বেঙ্গল টাইগার হানা দেয় খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে। এমনই ম্যানগ্রোভের জঙ্গলে বাঘের শিকারের মুখ থেকে লড়াই করে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন ৫৪ বছরের গৌর মন্ডল। হাসপাতালে দীর্ঘ সময় চিকিৎসা করে তিনি এখন সুস্থ যা অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৭ আগস্ট জঙ্গলে গিয়ে বিপদের সম্মুখীন হন গৌরবাবু। তার ডান দিকের ঘাড়ে বাঘের কামড়ে ভয়ংকর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কামড়ের দাগ এবং আঁচড়ের দাগ সহ একাধিক চোট তো ছিলই, এছাড়াও মাথার খুলির পিছনেও ছিল ভয়ংকর চোট। এই অবস্থায় মুখোমুখি হয়ে প্রত্যাঘাত করে গৌর মন্ডল বাঘের সামনে রুখে দাঁড়ান।
প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে তার আঘাতের চিকিৎসা করা হয়। এরপর কলকাতায় ট্রান্সফার করা হয় পরবর্তী চিকিৎসা করার জন্য। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে তাকে দ্রুত ভর্তি করা হয় বেসরকারি মণিপাল হসপিটাল, ঢাকুরিয়াতে। সঙ্গে সঙ্গেই একটি বিশেষ টিম, যেখানে ছিলেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা, তারা দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবায় নিয়োজিত হয়ে পড়েন।
ইমার্জেন্সী টিম পরিষেবায় দ্রুত ক্রিটিক্যাল সার্জারি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। অস্ত্রোপচার হয় তিন ঘন্টার বেশি সময় ধরে। অবশ্য এই অস্ত্রোপচার এর মধ্যে দিয়ে রিকভারির লম্বা পর্ব শুরু হয়। অস্ত্রোপচারের পর গৌর মণ্ডলকে আইটিইউতে ট্রান্সফার করা হয় যেখানে ভেন্টিলেশনের সাপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। ওনাকে সেরিব্রাল ডি কঞ্জেস্টেন্ট এবং ব্যথা কমার ওষুধ দেওয়া হয়। এছাড়া তাড়াতাড়ি সেরে ওঠার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। তার জ্ঞান ফিরে আসে এবং ধীরে ধীরে উন্নতি দেখা যায়। প্রথমে তাকে এইচডিইউতে তাকে নেওয়া হয় এবং পরবর্তী সময়ে সাধারণ ওয়ার্ডে ট্রান্সফার করা হয়। গৌর মন্ডলের সেরে ওঠা বেশ গতির মধ্যে হতে থাকে।
Tiger attack
সপ্তর্ষি সিংহ! স্নাতক কোর্স করার পর নিয়মিত লেখালেখি শুরু করেন।
৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখক হিসাবে কাজ করছেন।
বর্তমানে তিনি রাজারহাট বার্তা’র সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত।